Sale!

Best Economics Books

Original price was: ৳ 2,600.00.Current price is: ৳ 2,200.00.

-15%

আধুনিক পুঁজিবাদী অর্থনীতি গড়ে উঠেছিল অনেকটাই দাসপ্রথার ওপর ভিত্তি করে। অ্যামেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে বিশাল এলাকা জুড়ে তুলা চাষের করা হতো। এই চাষ করার কাজে ব্যবহার করা হত লক্ষ লক্ষ আফ্রিকান দাস। দাসদের দিয়ে তুলা চাষ করার ফলে তুলার উৎপাদন খরচ ছিল খুবই কম। আর কেউ চাষ করতে না চাইলে তাদের উপর করা হতো অমানুষিক অত্যাচার । এভাবে বিপুল পরিমাণে তুলার উৎপাদিত নিশ্চিত করা হতো । তুলা চাষের পর এই তুলা চলে যেত ব্রিটেনে। সেখানে ম্যানচেস্টারের মতো বড় বড় শিল্প শহরগুলোর কারখানায় তৈরি হতো কাপড় ও অন্যান্য জিনিস। আর সেই কারখানার প্রধান কাঁচামাল ছিল এই তুলা।

তুলা শিল্প ছিল ইতিহাসের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কারখানাভিত্তিক শিল্প। ইংল্যান্ডে যে শিল্প বিপ্লব হয় তাঁর মূলে ছিল এই তুলা শিল্প । এই সময় স্পিনিং জেনি এবং পাওয়ার লুমের মতো নতুন নতুন যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়। এই যন্ত্রগুলো আবিষ্কারের ফলে তুলা থেকে কাপড় তৈরির প্রক্রিয়াটা অবিশ্বাস্যরকম সহজ এবং দ্রুত হয়ে উঠে। এতে করে তুলা থেকে তৈরি করা কাপড় ও অন্যান্য পণ্য সস্তায় উৎপাদিত হতে শুরু করে। আর মেশিনে তৈরি হতো বলে অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ কাপড় উৎপাদিত হতো। এই কাপড়কে সারা বিশ্বে রপ্তানি করে ইউরোপের অর্থনিতি রাতারাতি ফুলে ফেপে উঠে। এই ঘটনাটা ইউরোপীয় অর্থনীতিকে নতুন মাত্রা দেয় এবং পৃথিবীতে শিল্প যুগের সূচনা করে।

তুলা উৎপাদন এবং তুলাজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ইউরোপ, অ্যামেরিকা, এশিয়া এবং আফ্রিকার অর্থনীতির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তুলা শুধুমাত্র একটি পণ্য হিসেবে নয়, বরং একটি বৈশ্বিক বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। এই বিষয়টা পুঁজিবাদের বিকাশকে আরও ত্বরান্বিত করে।

প্রথমে তুলা উৎপাদন করা হতো শুধু দাসদের দিয়ে। কিন্তু এভাবে আসলে দীর্ঘদিন এত বড় একটা শিল্পকে চালিয়ে নেওয়া সম্ভব না। তাই পরবর্তীকালে মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকের মাধ্যমে তুলা উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোতে, যেমন ভারতবর্ষে শ্রমিকদের জোরপূর্বক তুলা এবং নীল চাষ করানো হতো। অ্যামেরিকাতে যখন দাসদের দিয়ে আর চাষ করানো সম্ভব হলো না তখন তারা অ্যামেরিকাতে একটা নতুন সিস্টেম চালু করে। এটার নাম ছিল শেয়ারক্রপিং। এভাবে সস্তা শ্রমের মাধ্যমে তুলার উৎপাদন তর তর করে বাড়তে থাকে।

তুলার ব্যবসার আয় ছিল প্রুচুর। পাশাপাশি সেই তুলা দিয়ে কারখানাতে কাপড় তৈরি করে সারা বিশ্বে রপ্তানি করা হতো। এই মুনাফাকে আবার নতুন নতুন শিল্পে বিনিয়োগ করা হতো। ব্যাংক, বীমা কোম্পানি এবং বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলো তুলার বাণিজ্যের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। এভাবেই ধীরে ধীরে আজকের পুঁজিবাদী অর্থনীতির গড়ে উঠে।

তুলা শিল্পকে গড়ে তোলার জন্য মূল ভূমিকা পালন করেছে ইউরোপীয় উপনিবেশবাদ । তুলা চাষের জন্য জোরপূর্বক এলাকা দখল, দাসদের দিয়ে জোর করে তুলা চাষ করানো এবং চাষিদের উপর অত্যাচার করা হতো। এই বিষয়টাকে লেখক Beckert নাম দিয়েছেন “war capitalism”। অ্যামেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান দাসদের মাধ্যমে তুলার ব্যাপক উৎপাদন শুরু হয়। এরপরে তারা ধীরে ধীরে তা ক্যারিবিয়ান অঞ্চল এবং ভারত উপমহাদেশেও চলে আসে। এই তুলা চাষ এবং সেই তুলা থেকে সুতা উৎপাদনই মূলত ইউরোপের শিল্প বিপ্লবকে গতি দিয়েছিল।

এই তুলা শিল্প যেন তরতর করে এগিয়ে যায়, যেজন্য ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো সব ধরনের চেষ্টা করেছে। সরকার তুলা ব্যবসার ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক শুল্ক কমিয়ে ধরতো। উপনিবেশগুলোতে যদি তুলা চাষে কোন ঝামেলা তৈরি হতো তাহলে সরকার সামরিক শক্তি প্রয়োগ করতো। উপনিবেশগুলোর ব্যবসার ওপর সরকারী নিয়ন্ত্রণ ছিল ব্যপক। সরকার এমনসব নীতি তৈরি করতো যা তুলা বাণিজ্যকে সমর্থন করে। এভাবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটতে থাকে।

Empire of Cotton: A Global History বইটি পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন তুলা কেবল একটি পণ্য নয়। বরং তুলা ছিল পুঁজিবাদী অর্থনীতির গঠন এবং বিশ্বব্যাপী সমাজের রূপান্তরের প্রধান চালিকাশক্তি।  তুলা শিল্প এবং তুলা ব্যবসা সাম্রাজ্যবাদের প্রসার, দাসপ্রথা, শিল্প বিপ্লব এবং আধুনিক পুঁজিবাদের বিকাশের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। লেখক Beckert দেখিয়েছেন, তুলা শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিই আনেনি, বরং এটি আধুনিক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

 

এবার আসি অন্য গল্পে-

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে অবসিডিয়ান নামে এক ধরনের পাথুরে কাঁচ পাওয়া যায়। প্রাচীনকালে এই কাঁচগুলো দিয়ে খুবই ধারালো অস্ত্র বা হাতিয়ার তৈরি করা হত। এই পাথুরে কাঁচগুলো তৈরি হয় মূলত আগ্নেয়গিরির লাভা থেকে। আজ থেকে প্রায় ৯০০০ বছর আগে এই কাঁচগুলো তুরস্ক অঞ্চল থেকে নিয়ে সাইপ্রাস এবং জাগ্রোস পর্বতমালা অঞ্চলে রপ্তানি করা হতো। আবার প্রাচীনকালে ওয়েলসের কিছু পর্বতে এক ধরনের পাথর পাওয়া যেত, এই পাথরগুলো দিয়ে খুব ভাল কুঠার তৈরি করা যেত। এই পাথরগুলোও প্রাচীনকালে ১৪০ কিলোমিটার দূরের আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডে রপ্তানি হতো। প্রাচীন মিশরীয়রা অবসিডিয়ান কাচ আমদানী করত লৌহিত সাগরের আশেপাশের অঞ্চল থেকে।

মানব সভ্যতার বাণিজ্যের ইতিহাসকে আমরা যতটা সহজ সরল মনে করি, বিষয়টা আসলে ততটা সরল ছিল না। বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে বাণিজ্য করার জন্য অনেক প্রাচীনকালেই মানুষ খুবই জটিল কিছু ব্যবস্থা তৈরি করেছিল । আর আজকের দিনে আমরা যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দেখি সেটাও তৈরি হয়েছে ধীরে ধীরে বিভিন্ন ব্যবস্থার একটা ধারাবাহিক বিবর্তনের মধ্য দিয়ে। “More: The 10,000-Year Rise of the World Economy” এই বইতে “দ্যা ইকোনোমিস্টের” লেখক ফিলিপ কোগান এই বইতে  বিশ্বের অর্থনৈতিক ইতিহাসকে বিশ্লেষণ করেছেন সেই প্রাচীন কাল থেকে শুরু করে আজকের আধুনিক অর্থনীতি পর্যন্ত। ইতিহাস এবং অর্থনীতিতে আগ্রহী যে কারও বইটি ভাল লাগবে।

 

টাকা ছাপানোর গল্পটা জেনে নেই এবার-

একটা ব্যাংকের কাছে যদি ১০ কোটি টাকার স্বর্ণ মজুদ থাকে তাহলে সেই ব্যাংক ১০ কোটি টাকা ছাপাতে পারবে। অর্থাৎ ব্যাংকের কাছে যত টাকা মূল্যের স্বর্ণ আছে একটি ব্যাংক শুধুমাত্র ততগুলো টাকাই ছাপাতে পারবে, এর বেশি না। এই সিস্টেমটা চালু হয় আজ থেকে প্রায় দুইশত বছর আগে, ব্রিটেনে। এই সিস্টেমটাকে বলা হতো “গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড”।

তবে আজকের যুগে কিন্তু টাকা ছাপানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বা ফেডারেল রিসার্ভ সিস্টেমের কাছে টাকার সমান পরিমাণ স্বর্ন জমা থাকতে হয় না। তাহলে পুরনো দিনের সেই গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড চালুই হয়েছিল কেন, আর তুলেই বা দেওয়া হলো কেন? আর ২০০ বছরের আগে কি টাকার অস্তিত্ব ছিল না? টাকা নিয়ে আমাদের মনে এমন হাজার প্রশ্ন।

আসলে টাকার ইতিহাস খুবই ইন্টারেস্টিং, আর এর পেছনে রয়েছে শত শত গল্প। এই গল্প শুনতে শুনতে আপনি হারিয়ে যাবেন আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে। টাকা কীভাবে কাজ করে, আর টাকা জিনিসটা কীভাবে আজকের অবস্থায় আসলো তা সহজ সরল ভাষায় জানতে চাইলে পড়ে ফেলুন জ্যাকোব গোল্ডস্টিনের লেখা “Money: The True Story of a Made-Up Thing” বইটি।

 

ইউরোপের শিল্প বিপ্লবের গল্প-

আজ থেকে ২৫০ বা ৩০০ বছর আগে- চীন বা জাপানের কোন রাজবংশ, অটোম্যান সাম্রাজ্য, ভারতের মুঘল সাম্রাজ্য বা ইরানের সাফাভীয় সাম্রাজ্য- ক্ষমতা বা উন্নতির দিক থেকে কেউ কারও চেয়ে কম ছিল না। কিন্তু এরপর উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে শিল্প বিপ্লব ঘটে। আর এই শিল্পবিপ্লব পৃথিবীর ইতিহাসকে চিরকালের জন্য আলাদা করে দেয়। পশ্চিমা সভ্যতা অন্য সবাইকে ছাপিয়ে পৃথিবীর শাসক বনে যায়। এই বিষয়টাকে বলা হয়, “দ্যা গ্রেট ডাইভার্জেন্স”। সবদিক থেকে সমান উন্নত থাকার পরও- এই উন্নয়ন পৃথিবীর অন্য কোথাও না হয়ে কেন পশ্চিমেই ঘটল, এই বইতে লেখক সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

পৃথিবীর অর্থনৈতিক ইতিহাস, ভূ-রাজনীতি, মানব সভ্যতার বিবর্তন বিষয়ে আগ্রহী যেকোন পাঠকের জন্য “The Great Divergence: China, Europe, and the Making of the Modern World Economy” বই একটি দারুণ রিসোর্স।

 

এবার শেষ গল্প-

আজ থেকে মাত্র ১০০ বছর আগেও পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ, মহামারী, অর্থনৈতিক মন্দা এইসব লেগেই থাকত। পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ ছিল খুবই দরিদ্র। এমনকি প্রযুক্তি এত উন্নত হওয়ার পরও, এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও পৃথিবী থেকে দারিদ্র্যতা দূর হয়নি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, দারিদ্র্যতা কি কখনোই শেষ হবে না? আধুনিক অর্থনীতিকে বলা হয় পুঁজিবাদী অর্থনীতি। পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে কি মন্দা এবং অর্থনৈতিক সংকট এড়িয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই? ১৯৩০ এর দশকের “দ্যা গ্রেট ডিপ্রেসনের” সময় অর্থনীতির এইসব বিষয় নতুন করে আলোচনায় আসে। তখন জন মেনার্ড কেইনস নামে এক অর্থনীতিবিদ দেশের অর্থনীতির উপর সরকারি হস্তক্ষেপ করার ব্যাপারে উপদেশ দেন। তবে কেইনসের এই তত্ত্ব অনেক অর্থনীতিবিদ মেনে নেয়নি। অর্থনীতিকে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী চলতে দেওয়াটাই ভাল, না’কি সরকারী হস্তক্ষেপও দরকারী- সেটা নিয়ে এখনো বিরোধ আছে।

উপরের এইসব আলোচনা বা এইসব প্রশ্নের উত্তর অনেক জটিল হলেও বিষয়গুলো আমাদের প্রতিদিনের জীবনের অংশ। জিনিসের দাম বাড়লে বা মন্দা শুরু হলে আমাদের সবাইকেই সেটার ফল ভোগ করতে হয়। তাই আমরা সবাই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে চাই। কিন্তু অর্থনীতির এই তত্ত্বগুলো বেশ জটিল। সাধারণ পাঠকের পক্ষে সেগুলো বুঝতে বেশ বেগ পেতে হয়। লেখক নিয়াল ক্রিস্টিয়ানি তাঁর “A Little History of Economics” বইতে এই প্রশ্নগুলোর সহজ সরল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর গল্প বলার ভঙ্গী আর রসবোধের কারনে অর্থনীতির জটিল সব তত্ত্ব এবং প্রশ্নের উত্তর বুঝতে একদমই বেগ পেতে হয় না। বইটির লেখক একজন অর্থনীতিবিদ, ইতিহাসবিদ এবং লেখক। এখানে তিনি তুলে এনেছেন মানব সভ্যতার হাজার বছরের অর্থনৈতিক যাত্রা।

বইটির শেষ অংশে বিভিন্ন আধুনিক অর্থনৈতিক তত্ত্ব, যেমন মনেটারিজম, নিউ-ক্লাসিকাল অর্থনীতি এবং গ্লোবালাইজেশনের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মুক্ত বাজার, সরকারি নীতি, এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এসব বিষয়েও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। অর্থনীতির একদম প্রাচীনকালে ফিরে গিয়ে গ্রিক দার্শনিকদের চিন্তাভাবনা, যেমন অ্যারিস্টটলের ধারণা, মধ্যযুগের স্কলাস্টিক চিন্তাধারা, এবং অ্যাডাম স্মিথের সময়ের আগে কীভাবে মানুষ অর্থনৈতিক বিষয়গুলি ভাবতো, সেগুলোও তিনি বিশ্লেষণ করেছেন। অর্থনীতি নিয়ে আগ্রহী যেকোনো পাঠকের বইটি ভাল লাগবে।

 

পৃথিবীর অর্থনৈতিক ইতিহাস, ভূ-রাজনীতি, মানব সভ্যতার বিবর্তন বিষয়ে আগ্রহী যেকোন পাঠকের জন্য এই পাঁচটি বই অবশ্য পাঠ্য।

  1. More – The 10,000-year rise of the world economy- Philip Goggan
  2. Money- The True Story of a Made-Up Thing- Jacob Goldstein
  3. A Little History of Economics- NIALL. KISHTAINY
  4. The Great Divergence by Kenneth Pomeranz
  5. Empire of cotton- A global history-Sven Beckert

 

বইগুলো আমাদের কাছ থেকে নিতে চাইলে আজই অর্ডার করুণ অথবা WhatsApp এ মেসেজ করুণ এই নাম্বারে 01950-886700 ।

Additional information

Cover Type

Hardcover

Print Quality

Premium Quality print, 80 Gsm off-white offset paper.

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “Best Economics Books”

Your email address will not be published. Required fields are marked *