

The Power of Geography: Ten Maps That Reveal the Future of Our World
Original price was: ৳ 550.00.৳ 430.00Current price is: ৳ 430.00.
-22%উত্তরে সাহারা মরুভূমি আর দক্ষিণে সুদানের সাভানা তৃণভূমি– এর মাঝখানে যে অঞ্চলটা আছে সেটা হলো আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল। সাহেলের দশটি দেশই হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে অশান্তির জায়গা। কারন অনেকগুলো। বেশিরভাগ দেশেই হয় সামরিক শাসন চলছে, অথবা সরকার খুবই দুর্বল। সন্ত্রান্স, জঙ্গিবাদ, গোলাগুলি থামানোর মত শক্তি প্রশাসনের নেই। তার উপর প্রতিনিয়ত লিবিয়া থেকে অবাধে অস্ত্র ঢুকছে। জনসংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে, কিন্তু অর্থনৈতিক অবস্থা খুব দ্রুত খারাপ হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই অঞ্চলটি মহাখড়ার কবলে আছে প্রায় চারশ বছর ধরে। পাশাপাশি আছে বিদেশী শক্তির বাম হাত প্রবেশ। এছাড়াও এই অঞ্চলের যাযাবর পশুপালক ও কৃষকদের মধ্যে একটা ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব আছে । এই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ লেগেই থাকে । সাথে আছে স্থানীয় ক্রিমিনাল গ্যাং। এই অঞ্চলটা নরক হওয়ার জন্য এগুলোই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু বোনাস হিসেবে আছে কয়েকটি ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী এবং তাদের মধ্যে বিবাদ। আইসিস, বোকো হারাম, আল কায়েদা সবাই আছে এই অঞ্চলে। এতসব সহিংসতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকলে সেই অঞ্চলের সাধারণ মানুষও মারাত্মক অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠবে, এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু এই অঞ্চলের সমস্যা আর অশান্তি শুধুমাত্র এই অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। রপ্তানি হচ্ছে। শুধুমাত্র বিগত কয়েক বছরেই এই অঞ্চলের ৩.৮ মিলিয়ন মানুষ এই অঞ্চলে থেকে ভূমধ্যসাগর পার হয়ে ইউরোপে গিয়ে ঢুকেছে। তুলনামূলক কম জনসংখ্যার অঞ্চল হলেও ইউরোপে ২৬ মিলিয়নের বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। এই হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে শরণার্থী ব্যবস্থাপনা নিয়ে ইউরোপ অলরেডি প্রচুর চাপের মধ্যে আছে। তার উপর সাহেল অঞ্চল থেকে আসা শরণার্থীরা এমন একটি সামাজিক পরিস্থিতি থেকে এসেছে যে তারা ইউরোপীয় সমাজের সাথে মোটেই খাপ খাওয়াতে পারছে না । অন্যদিকে বেশিরভাগ ইউরোপীয় নাগরিক এই অঞ্চলের মানুষ এবং তাদের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না। এর ফলে ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছে একটা নতুন ভয়ংকর পরিস্থিতি। ইতোমধ্যে সুইডেনসহ বেশকিছু দেশ এই খারাপ প্রভাব বুঝতে পেরেছে এবং সেই সমস্যা সামাল দিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। সুইডেনে ঘন ঘন আতংক ছড়াচ্ছে, নরওয়েতে বন্দুক হামলা হচ্ছে। তাহলে ইউরোপ কি শরণার্থী বিষয়ে তাদের অবস্থান বদলাতে যাচ্ছে? আর ইতোমধ্যে যে সমস্যার বীজ তৈরি হয়েছে– ইউরোপ কি এই সমস্যা সামাল দিতে পারবে? অন্যদিকে সাহেল হলো একটা সমস্যার ফ্যাক্টরি। এই ফ্যাক্টরিতে যে বোমা তৈরি হচ্ছে সেই বোমা কখন বিস্ফোরিত হবে? কারাই বা বিস্ফোরন ঘটাবে? এখানে ফ্রান্স এবং অ্যামেরিকার সেনাবাহিনী যে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে তার ভবিষ্যৎ কী? সাহেল অঞ্চল আগামী দিনে কিভাবে বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করবে?
এবার আসি সৌদি আরবের দিকে। ১৭৪০ সালে মধ্য আরবের নজদ অঞ্চলের বেশ কিছু অংশ স্থানীয় আমির মুহাম্মাদ বিন সৌদ নিয়ন্ত্রন করতেন। ১৯৩০ সালের মধ্যে তার এক বংশধর নিজেদের শাসন এলাকা আরও অনেকখানি বৃদ্ধি করেন এবং এলাকার নাম বদলে নাম রাখেন সৌদি আরব। এখন একটা দেশের নাম যদি একটা পরিবারের নামে রাখা হয়, তাহলে ওই দেশের অন্য পরিবারগুলোর কি হবে! শুনতে আজব শোনালেও সৌদি আরবের ক্ষেত্রে ঠিক এটাই হয়েছে। এর ফলে দেশের মধ্যে তৈরি হয়েছে অনেক জটিলতা। দেশটির উপসাগর অঞ্চলে রয়েছে বেশকিছু সিয়া মতালম্বী। উগ্র সুন্নি মতবাদের বিকাশের ফলে সেখানে জন্ম নিয়েছে অসন্তোষ। কিন্তু ১৯৩৮ সালে অ্যামেরিকানরা সৌদি আরবে তেলের সন্ধান পায়, বদলে যায় সৌদি আরবের পরিবর্তী ইতিহাস। তেল এনে দেয় সম্পদ, সম্পদ এনে দেয় বিশ্বের বড় বড় শক্তির ঘনিষ্ঠতা। কিন্তু তেল একটি প্রাকৃতিক সম্পদ। এক সময় তেল শেষ হয়ে যাবে, আর অন্যদিকে বিশ্বেও তেলের চাহিদা কমবে। তাই সৌদি আরবকে এখন বিকল্প খুজতে হচ্ছে। এই বিকল্প অর্থনীতি কি ঘনিষ্ঠতা পরিবর্তন করবে? কোন পথে যাচ্ছে সৌদি আরব? সৌদির পরবর্তী অর্থনীতি কি কয়েকশত বছরের পুরনো ইসলামী সংস্কৃতিকে বালিত করে দেবে? কেমন হবে সৈদি আরবসহ বাকি আরব বিশ্বে?
অন্যদিকে ভূ-রাজনীতি ভূমি থেকে আকাশে উঠতে যাচ্ছে। কারন ভূমিতে যেমন সম্পদ আছে, তেমনি চাঁদেও আছে। ভূমিতে জায়গা দখল করলে বন্দুক রাখার ষ্টেশন বানানো যায়, তেমনি মহাকাশ বা চাঁদেও ষ্টেশন বানানো প্রয়োজন। ২০২০ সালের অক্টবর মাসে অ্যামেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, যুক্তরাজ্য এবং লুক্সেমবার্গ আর্টেমিস চুক্তি নামে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এই চুক্তি অনুযায়ী তারা ২০২৮ সালে চাঁদে ১৩ তম মানুষ এবং প্রথম নারী পাঠবে। এই অভিযানের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো চাঁদে একটি বেজ ক্যাম্প তৈরি করা এবং খনিজ সম্পদ আহরন করা। কিন্তু এই বেজ ক্যাম্পটিই পরবর্তীতে দূরমহাকাশে মানব বসতি স্থানান্তরের জন্য লাঞ্চ প্যাড হিসেবে ব্যবহার হবে। চুক্তি অনুযায়ী যেসব দেশ এতে অংশ এবং কার্যক্রম পরিচালনা করবে তাদের অবশ্যই ২০২৪ সালের মধ্যে স্বাক্ষর করতে হবে এবং কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে হবে। এতে পরবর্তীতে ২১ টি দেশ স্বাক্ষর করলেও বাকি দেশগুলো স্বাক্ষর করেনি। কিন্তু সমস্যা সেটা না। সমস্যা হলো- এতে না স্বাক্ষর করেছে রাশিয়া, না স্বাক্ষর করেছে চীন। প্রথমত এরা স্বাক্ষর করবে না, আর স্বাক্ষর করতে চাইলেও সম্ভবত এদের স্বাক্ষর করতে দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে স্পেস ষ্টেশন নিয়েও অ্যামেরিকার সাথে রাশিয়ার দ্বন্দ্ব হয়েছে। তাই স্পেস স্টেশনেও আর অ্যামেরিকা ও রাশিয়া একসাথে কাজ করছে না। চীন আর রাশিয়া আলাদা আলাদাভাবে চাঁদে তাদের বেজ ষ্টেশন তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে। এখন রাশিয়া, চীন বা অ্যামেরিকা কেউই চাইবে না চাঁদে বেজ ক্যাম্প করার জন্য প্রতিপক্ষ কোন নিয়ম তৈরি করুক। কে’ইবা অন্যের তৈরি করা নিয়ম মানতে চায়! রাশিয়ান স্পেস এজেন্সির প্রধান Dmitry Rogozin অলরেডি ঘোষণা দিয়েছেন যে– কোন রকম সম্মতিতে না এসে চাঁদে বা মহাকাশে আগ্রাসন চালালে আরেকটি আফগানিস্থান বা ইরাক তৈরি হতে পারে। তাহলে এতসব দ্বন্দ্বের মধ্যে কেমন হতে যাচ্ছে আগামী দিনের মহাকাশ রাজনীতি?
বিখ্যাত ব্রিটিশ সাংবাদিক এবং লেখক টিম মার্শালের মতে দশটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল আগামী দিনের বৈশ্বিক রাজনীতির গতিপথকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করবে । এই অঞ্চলগুলো হলো- ইরান, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, তুরস্ক, গ্রিস, সাহেল, ইথিওপিয়া, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া এবং মহাকাশ। তিনি তার পাওয়ার অফ জিওগ্রাফি বইতে এই অঞ্চলগুলোর ইতিহাস, বর্তমান অবস্থা এবং সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন। যারা লেখকের প্রথম বই প্রিজনার্স অফ জিওগ্রাফি সম্পর্কে জানেন তাদের আর লেখক সম্পর্কে নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। ভদ্রলোকের ভাষা একদম পরিষ্কার। যা বলতে চান খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা করতে পারেন। ভূ-রাজনীতি নিয়ে যদি আপনার আগ্রহ থাকে তাহলে অবশ্যই বইটি পড়ে ফেলুন।
Additional information
Author | Tim Marshall |
---|---|
Cover Type | Hardcover |
Print Quality | Premium quality print on 80 GSM off-white paper |
Reviews
There are no reviews yet.